স্টাফ রিপোর্টার: নওগাঁ শহরের মুক্তির মোড়ে অবস্থিত জেলা পরিষদ পার্ক। পার্কটি সংস্কার ও উন্নয়নের উদ্যোগ নিয়েছে জেলা পরিষদ। ঠিকাদার সংস্কার কাজে নিম্নমানের সামগ্রি ব্যবহার করার অভিযোগে সেগুলো অপসারণের জন্য জেলা পরিষদ থেকে নোটিশ করা হয়।
অবশেষে বাধ্য হয়ে ঠিকাদার সেগুলো অপসারণ করছেন। ঠিকাদার কাজে নয়ছয় করে মোটা অংকের টাকা লাভ করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু এখন লাভের ভাগ টিয়া পাখি খাওয়ার মতো অবস্থা তার।
এদিকে, দরপত্র অনুযায়ী ঠিকমতো কাজ না হলে এক টাকাও পরিশোধ করা হবে না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান।
জানাগেছে, নওগাঁ শহরের হাট-নওগাঁ মহল্লার মেসার্স ফাহাদ এন্ট্রারপ্রাইজ উন্নয়নের জন্য জেলা পরিষদ থেকে কাজটি পেয়েছে। যার প্রাক্কলিত ব্যয় ১ কোটি ৪৫ লাখ টাকা। কিন্তু চুক্তি মুল্য ১ কোটি ৩৭ লাখ ৭৫ হাজার টাকা।

যেখানে প্রাচীর সংস্কার ও প্লাস্টার এবং পার্কের ভিতরে ফুটপাতের রাস্তায় ২৫ মিলিমিটার পুরুত্বে পার্কিং টাইলস ব্যবহার করতে হবে। কাজটি সমাপ্তির সময় নির্ধারন কর হয়েছে আগামী বছরের ১২ জানুয়ারীতে।
কাজটি ঠিক মতো তদারকি না করায় উপসহকারী প্রকৌশলী জাকির হোসেনকে কারণ দর্শানোর (শোকজ) নোটিশ করা হয়।
অভিযোগ রয়েছে- প্রাচীর সংস্কারে গাথুনিতে দুই নম্বর ইট এবং প্লাস্টারে বিট বালু ব্যবহার করা হয়েছিল। এছাড়া পার্কের ভিতরে ফুটপাতের রাস্তায় ২৫ মিলিমিটার পুরুত্বের পার্কিং টাইলস ব্যবহার না করে ১২ দশমিক ৫ মিলিমিটার এবং ১৫ মিলিমিটার পুরুত্বের টাইলস ব্যবহার করা হয়।
কাজের অনিয়ম নিয়ে ঠিকাদারকে জেলা পরিষদ থেকে নোটিশ করা হয়। সংস্কারের নিম্নমানের সামগ্রি ব্যবহার করায় নোটিশের পর অবশেষে সেগুলো অপসারন করা হচ্ছে।

নোটিশে বলা হয়- ‘নওগাঁ জেলা পরিষদ পার্ক উন্নয়ন কাজ পরিদর্শনে দেখা যায় প্রাক্কলন মোতাবেক পার্কের পার্কিং টাইলস ব্যবহার না করে ১২ দশমিক ৫ মিলিমিটার এবং ১৫ মিলিমিটার পুরুত্বের টাইলস ব্যবহার করেছেন। যার গুনগতমানও সঠিক নেই।
এছাড়াও আপনার সরবরাহকৃত ও অফিস কর্তৃক নির্দিষ্ট করা টাইলস সংরক্ষণ পূর্বক কাজ করার নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। কিন্তু তার সাথে ব্যবহৃত টাইলস মিল পরিলক্ষিত হচ্ছে না। যা ভৌত সামগ্রী নির্মাণ কাজে ব্যবহার অগ্রহন যোগ্য, বিধি লঙ্ঘন ও ঠিকাচুক্তি শর্তের পরিপন্থী।
পার্কের সাইড থেকে বর্হিভুত নির্মাণ সামগ্রী ও টাইলস অপসারণ করে প্রাক্কলনে বর্ণিত নির্দিষ্ট পার্কিং টাইলস দ্বারা যথাযথভাবে নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করার জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো। অন্যথায় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।’
এদিকে, কাজের ঠিকাদার মেসার্স ফাহাদ এন্ট্রারপ্রাইজ এর প্রোপাইটর তানজিমুল ইসলাম এর সঙ্গে যোগাযোগ করতে দুইদিন পার্কে গিয়ে তাকে পাওয়া যায়নি।
এছাড়া মুঠোফোনে দুইদিন থেকে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি। তার ব্যবহৃত মুঠোফোনে খুদে বার্তা পাঠানো হলেও কোন উত্তর দেননি।

উপসহকারী প্রকৌশলী জাকির হোসেন বলেন, ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান যে কাজটি করছিল তা ভাল হচ্ছিল না। স্টাইলসের ফিটনেস কম ছিল। পরবর্তীতে কাজ ভাল হয়নি মর্মে বিষয়টির উপর অফিসে একটা প্রতিবেদন দিয়েছিলাম।
এরপর অফিস থেকে ঠিকাদারকে একটা নোটিশ করা হলে সেগুলো তুলে ফেলে পুনরায় কাজটি করা হচ্ছে। তবে তাকে শোকজ করা হয়নি বলে অস্বীকার করেন।
নওগাঁ জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট একেএম ফজলে রাব্বি বলেন, কাজটি মানসম্পূর্ন করা হচ্ছিল না। সেগুলো অপসারনের জন্য নোটিশ করা হয়। কাজটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে শেষ হবে না বলে মনে হচ্ছে।
যদি শেষ না হয় আবারও সময় বৃদ্ধি করা হবে। কাজের একটি টাকাও বিল দেয়া হয়নি। যদি দরপত্র অনুযায়ী ঠিকমতো কাজ না করা হয় তাহলে বিল দেয়া হবেনা বলে সাবধান করা হয়।
তিনি বলেন, ওই সময় কাজের যে উপসহকারী প্রকৌশলী ছিলেন তিনি ঠিক মতো কাজ তদারকি না করায় তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ করা হয়েছিল।
Leave a Reply