রেজিনা টার্নার

বিদেশ ডেস্ক: একাধারে সুন্দরী, তার ওপর ক্ষুরধার বুদ্ধিমতী। প্রথম সাক্ষাতেই মন দেওয়া নেওয়া। গাঁটছড়া বাঁধতেও সময় লাগেনি। কিন্তু সংসারের বৃত্তের বাইরে আলো আঁধারি জগতে যে স্ত্রীর আনাগোনা, সাড়ে পাঁচ বছর সংসার করেও টের পাননি স্বামী। টেরে পেতেই স্ত্রীকে আদালতে নিয়ে গেলেন তিনি।

জেফ বেজোস-ম্যাকেঞ্জি স্কট, বিল গেটস-মেলিন্ডা গেটস, ব্র্যাড পিট-অ্যাঞ্জেলিনা জোলির পর কোটিপতি চিকিৎসক এবং তার ‘বিউটি কুইন’ স্ত্রীর হাই-প্রোফাইল বিবাহবিচ্ছেদ নিয়ে বর্তমানে তুমুল আলোচনা চলছে আমেরিকায়। তবে খোরপোষ বা সন্তানের অধিকার নিয়ে টানাপড়েন নয়; তাদের দাম্পত্যের ছল-চাতুরির কাহিনী জানতে উদগ্রীব মার্কিনিরা।

চিকিৎসক হিসেবে আমেরিকার অভিজাত মহলে বেশ নামডাক রয়েছে হান জো কিমের। মিস কানেটিকাট প্রতিযোগিতার বিজয়ী রেজিনা টার্নারকে ২০১৫ সালে বিয়ে করেন তিনি। ম্যানহাটনের বিলাসবহুল অ্যাপার্টমেন্টে সংসার পেতেছিলেন দু’জনে। হেসে খেলেই প্রায় ছ’বছর একসঙ্গে কাটিয়ে দেন। কিন্তু গত জুলাইয়ে আচমকাই তাদের বিচ্ছেদে আইনী সিলমোহর পড়ে যায়।

বিবাহিত থাকাকালীন ৪১ বছরের হান এবং ৩২ বছরের রেজিনার মধ্যে মনোমালিন্যের কোনও খবর মেলেনি। তাই তাদের বিচ্ছেদের খবরে অবাক হয়ে যান অনেকে। কিন্তু আইনি জটিলতা মিটে যাওয়ার পর বিচ্ছেদের যে কারণ সামনে এসেছে, তাতে বেশ শোরগোল পড়ে যায়।

আদালতে হান জানিয়েছেন, বিয়ের আগে থেকেই দেহব্যবসা করতেন রেজিনা। স্বামীকে অন্ধকারে রেখে বিয়ের পরও তা চালিয়ে যান। এমনকি শুধুমাত্র দেহব্যবসা করেই রেজিনা ৫ কোটি টাকার বেশি উপার্জন করেছেন বলেও জানিয়েছেন।

আদালতে জমা দেওয়া নথিতে স্ত্রীকে ‘ছলনাময়ী’ এবং ‘জালিয়াত’ বলে উল্লেখ করেছেন হান। তার অভিযোগ, নিজের জীবন নিয়ে আগাগোড়া মিথ্যা বলে এসেছেন রেজিনা। কানেটিকাট বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান নিয়ে পড়াশোনা করেছেন বলে তাকে জানিয়েছিলেন রেজিনা। কিন্তু আসলে হাইস্কুলও পাশ করেননি তিনি।

শুধু তাই নয়, হানের দাবি— জামাকাপড়ের একটি অ্যাপ নিয়ে কাজ করতে প্রায়ই চীন যেতেন রেজিনা। অন্তত এক সপ্তাহ সেখানে থাকতেন তিনি। কিন্তু কাজ নয়, আসলে রেজিনা সেখানেও ধনী গ্রাহকদের সুখ দিতে যেতেন বলেও দাবি করেন হান। আমেরিকার সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বড় ছেলে ডোনাল্ড ট্রাম্প জুনিয়রও টুইটারে রেজিনাকে ফলো করেন।

হান জানিয়েছেন, অন্য পুরুষের সঙ্গে ফোনে স্ত্রীর যৌন উত্তেজনামূলক মেসেজে প্রথমে সন্দেহ হয় তার। তাতে ঘনিষ্ঠ মুহূর্ত নিয়ে আলোচনা করতে দেখেন দু’জনকে।

স্ত্রীর গ্রাহকের তালিকায় নিউ ইয়র্কের ধনী রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ী, নামিদামি আলোকসজ্জা শিল্পীরা ছিলেন বলেও জানিয়েছেন হান। তার দাবি, বিভিন্ন অ্যাকাউন্ট থেকে রেজিনার অ্যাকাউন্টে প্রায়ই ২ হাজার ডলারের চেক জমা পড়ত।

শুধুমাত্র রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ীর কাছ থেকেই রেজিনা ১ কোটি ৩৭ লাখ টাকা উপার্জন করেন বলে দাবি করেন হান। যদিও বিচ্ছেদের মামলার শুরুতে রেজিনার দাবি ছিল, তার কোনও উপার্জন নেই। স্বামীর ওপরই পুরোপুরি নির্ভরশীল তিনি। তাই বিচ্ছেদবাবদ মোটা অংকের খোরপোষ প্রাপ্য তার।

মার্কিন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত পরিসংখ্যান অনুযায়ী, শুধুমাত্র ২০১৮ সালেই মেরুদণ্ডে অস্ত্রোপচার করে প্রায় ৩২ লাখ ডলার 
উপার্জন করেন কিম। আমেরিকার অন্যতম প্রসিদ্ধ এবং ধনী চিকিৎসক তিনি।

কিন্তু হান কীভাবে রেজিনার ফাঁদে পা দিলেন; তা এখনও বোধগম্য হচ্ছে না অনেকেরই। যদিও হানের ঘনিষ্ঠমহলের দাবি, রেজিনা অত্যন্ত সুন্দরী। বহু কোটিপতিই তাকে বিয়ে করার জন্য মুখিয়ে ছিলেন। তাদের নজর থেকে কার্যত ছোঁ মেরে রেজিনাকে জিতে নেওয়াই লক্ষ্য ছিল হানের। তাই রেজিনার অতীত খুঁটিয়ে জানার তাগিদই অনুভব করেননি তিনি।

Leave a Reply