নাটোর: নাটোরের বড়াইগ্রামে দশম শ্রেণিতে পড়ুয়া এক স্কুলছাত্রীর (১৬) সঙ্গে আপত্তিকর ছবি ভাইরাল করার অভিযোগে জমশেদ আলী মণ্ডল (৫০) নামে এক কাঠ ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার তাকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।
গ্রেফতার জমশেদ আলী উপলশহর গ্রামের আজিজুল ইসলাম মণ্ডলের ছেলে।
থানা ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, একই গ্রামের ওই স্কুলছাত্রীর পরিবারে নিয়মিত যাতায়াত ছিল জমশেদ আলীর। একপর্যায়ে মেয়েটির সঙ্গে তিনি কৌশলে অনৈতিক সম্পর্ক গড়ে তোলেন। ওই পরিবারের সঙ্গে ছোটখাটো আর্থিক লেনদেনও হতো তার।
বছরখানেক আগে সম্পর্কের অবনতি হলে স্থানীয় ইউপি সদস্য ও গ্রামপ্রধানদের কাছে ছাত্রীর পরিবারের কাছে পাওনা টাকা আদায় করে দেওয়ার জন্য অভিযোগ করেন জমশেদ। পরে এ ব্যাপারে গ্রাম্য সালিশের রায়ে ৮ হাজার টাকা পরিশোধ করে ওই ছাত্রীর স্বজনরা।
এরপর জমশেদ ওই ছাত্রীর সঙ্গে তার অন্তরঙ্গ মুহূর্তের কিছু অশ্লীল ছবি ওই ছাত্রী ও তার অভিভাবকদের দেখিয়ে ব্ল্যাকমেইল করার চেষ্টা করে। জমশেদের এ ধরনের আচরণে অতিষ্ঠ হয়ে ওই ছাত্রীর বাবা-মা তাকে নিয়ে ঢাকায় চলে যান।
এতে ক্ষিপ্ত হয়ে লম্পট জমশেদ ওই ছাত্রীর সঙ্গে তার অর্ধনগ্ন অন্তরঙ্গ একটি ছবি ইমোতে বিভিন্নজনের কাছে পাঠালে বিষয়টি ব্যাপক প্রচার হয়ে যায়।
এ ব্যাপারে স্থানীয় ইউপি সদস্য নুর ইসলাম সিদ্দিকী বলেন, টাকা-পয়সার লেনদেন নিয়ে তিনি একটা সালিশ করেছেন। সেই টাকা পরিশোধের পরও ওই মেয়েকে নানাভাবে ব্ল্যাকমেইল করার চেষ্টা করতো বলে অভিযোগ পেয়ে বারবার নিষেধ করলেও তা আমলে নেয়নি জমশেদ। বর্তমানে মান-সম্মানের ভয়ে পুরো পরিবার এলাকা ছেড়ে ঢাকায় চলে গেছে।
এ ব্যাপারে মেয়েটির পিতা মোবাইলে বলেন, আমার সহজ-সরল মেয়ের জীবনটাকেই লম্পট জমশেদ শেষ করে দিয়েছে। তার অত্যাচারে বাধ্য হয়ে মেয়ে ও স্ত্রীকে নিয়ে ঢাকায় এসে পেটের তাগিদে গার্মেন্টসে কাজ করছি।
মেয়েটাকে বিয়ে দেওয়ারও চেষ্টা করেছি কয়েকবার। কিন্তু যেখানেই বিয়ের কথা হয়, সেখানেই ওই আপত্তিকর ছবি দিয়ে বিয়ে ভেঙে দেয় সে। আমাদের জীবনটাকে সে বিষিয়ে তুলেছে।
এ ব্যাপারে বড়াইগ্রাম থানার এসআই শামসুল ইসলাম জানান, মঙ্গলবার জমশেদের নামে ধর্ষণ ও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দিয়ে কোর্টের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।
Leave a Reply