প্রিয় দেশ ডেস্ক: পুলিশের এডিশনাল এসপি গোলাম সাকলায়েনের সঙ্গে আলোচিত চিত্রনায়িকা পরীমণির একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। সাকলায়েনের জন্মদিনে ধারণ করা ওই ভিডিও মঙ্গলবার বিকেল থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়।
এক মিনিট ৩৯ সেকেন্ডের ওই ভিডিওতে দেখা যায়, নীল বেলুনে সাজানো একটি কক্ষে সাকলাইয়েন ও পরীমণি হাতে হাত ধরে কেক কাটছেন। এর আগে পরীমণি সাকলাইয়েনকে উদ্দেশ করে হ্যাপি বার্থ ডে টু ইউ বলেন। একপর্যায়ে তিনি পুলিশ কর্মকর্তাকে কেক খাইয়ে দেন। সাকলায়েনও পরীমণিকে কেক খাইয়ে দেন।
কালো শার্ট পরা সাকলায়েন ও শাড়ি পরিহিত পরীমণিকে পুরো সময়টাতেই বেশ হাসোজ্বল দেখাচ্ছিল। ভিডিওতে পরীমণিকে কেকের একটি টুকরো মুখে নিয়ে তা সাকলায়েনকে খাইয়ে দিতে দেখা যায়। ভিডিওটির শেষ দিকে পরীমণিকে নাচতেও দেখা গেছে।
যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী একটি বেসরকারি টেলিভিশনের সাবেক সাংবাদিক ইলিয়াস হোসেনের ইউটিউব চ্যানেলে মঙ্গলবার (১০ আগস্ট) সন্ধ্যার দিকে ভিডিওটি আপলোড করা হয়।
ভিডিওর ক্যাপশনে লেখা ছিল, ‘পরীমণি ও পুলিশ কর্মকর্তা সাকলায়েনের গোপন ভিডিও! সাকলায়েন পরীমণির সঙ্গে তার অবৈধ সম্পর্কের কথা অস্বীকার করলেও তাদের গোপন একটি ভিডিও আমাদের কাছে পাঠান নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেকজন পুলিশ কর্মকর্তা।’
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রে বসে একজন প্রবাসী সাংবাদিক কীভাবে সংবেদনশীল এ ভিডিও সংগ্রহ করলেন, কে বা কারা তাকে ভিডিওটি পাঠিয়েছেন, তা নিয়ে নানা মহলে আলোচনা চলছে। সাংবাদিক ইলিয়াস ভিডিওর ক্যাপশনে ‘একজন পুলিশ কর্মকর্তা’র কাছ থেকে ভিডিওটি সংগ্রহ করেছেন বলে দাবি করেন।
এ বিষয়ে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা বলেন, একটি পেশাদার বাহিনীর সদস্য হিসেবে পুলিশের কেউ এ ভিডিও ছড়াতে পারে না। তাছাড়া এ ভিডিও পুলিশের হাতে আসার কথা নয়।
পুলিশ যেসব ফৌজদারি মামলা তদন্ত করছে, এ ভিডিও সেগুলোর মধ্যে কোনোটির আলামত নয়। মামলার আলামত না হওয়ায় এটি জব্দ করার প্রশ্নই ওঠে না। যিনি ভিডিওটি প্রবাসী সাংবাদিককে পাঠিয়েছেন, তিনি দুপক্ষের পরিচিত কেউ। ব্যক্তিস্বার্থ হাসিলের জন্যেই তিনি ভিডিওটি পাঠিয়েছেন।
দায়িত্বশীল একটি সূত্র জানিয়েছে, যে ভিডিওটি ফাঁস হয়েছে, সেটি ঈদের পর পুলিশ কর্মকর্তা সাকলায়েনের বাসায় ধারণ করা। সেখানে উপস্থিত ছিলেন পরীমণি, তার কস্টিউম ডিজাইনার জিমি এবং তার গাড়ি চালক। জিমি মূলত সেই ভিডিওটি ধারণ করেছেন। বর্তমানে তিনি মহানগর ডিবি পুলিশের হেফাজতে রিমান্ডে রয়েছেন।
একই সূত্র জানায়, সাকলায়েনের বাসার নিচের সিসি ক্যামেরার যে ফুটেজ ফাঁস হয়, সেটিও কোনো পুলিশ সদস্যের মাধ্যমেই হতে পারে। কারণ এ কর্মকর্তা রাজারবাগ পুলিশ লাইন্সের ভেতরে একটি ভবনে থাকতেন। সেই ভবনের পুরো দায়িত্ব পুলিশের হাতেই।
ভিডিও ফাঁস করা এবং প্রবাসী সাংবাদিককে পাঠানোর অভিযোগের বিষয়ে পুলিশ সদর দফতরের সহকারী মহাপরিদর্শক (এআইজি-মিডিয়া) মো. সোহেল রানা বলেন, পুলিশ কর্মকর্তাসহ সরকারি কর্মকর্তাদের জন্য আচরণবিধি রয়েছে।
এছাড়া, দেশে প্রচলিত আইন রয়েছে। কোনো কর্মকর্তা যদি আচরণবিধি বা আইন লঙ্ঘন করেন, তাকে তার দায় নিতে হবে। পরীমণিকে নিয়ে ওই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ তদন্তের জন্য ইতোমধ্যে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।
কমিটি কাজ করছে। ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করার কথা রয়েছে। প্রতিবেদন হাতে পেলে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ডিবি থেকে বদলি হওয়া সাকলায়েন বর্তমানে নতুন কর্মস্থল পিওএম-পশ্চিম বিভাগে যোগদান করেছেন। তিনি সেখানে নিয়মিত অফিস করছেন বলেও জানা গেছে।
Leave a Reply