স্টাফ রিপোর্টার, রাজশাহী: গত ২৪ ঘণ্টায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের করোনা আইসোলেশন ইউনিটে আরও ৯ জন মারা গেছেন। এদের মধ্যে করোনায় ৪ জন এবং করোনা উপসর্গে ৫ জন মারা গেছেন।
চিকিৎসাধীন অবস্থায় মঙ্গলবার (১৭ আগস্ট) সকাল ৯টা থেকে বুধবার (১৮ আগস্ট) সকাল ৯টার মধ্যে এরা মারা যান।
রামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, গত ২৪ ঘন্টায় করোনা সংক্রমণে রাজশাহীর ৩ জন এবং নাটোরের একজন প্রাণ হারিয়েছেন। এ ছাড়া করোনা সংক্রমণের উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন নওগাঁর ২ জন এবং রাজশাহী, নাটোর ও মেহেরপুরের একজন করে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে মরদেহ দাফনের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
তিনি জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ৩ জন মারা গেছেন হাসপাতালের ২২ নম্বর ওয়ার্ডে। এ ছাড়া ১ নম্বর ও ২৯/৩০ ওয়ার্ডে ২ জন করে এবং নিবীড় পরিচর্যাকেন্দ্র (আইসিইউ) ও ১৫ নম্বর ওয়ার্ডে একজন করে মারা গেছেন।
এই একদিনে ৩ জন পুরুষ এবং ৬ জন নারী প্রাণ হারিয়েছেন করোনা ইউনিটে। যাদের ৪ জনের বয়স ৬১ বছরের উপরে। এ ছাড়া ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে ২ জন, ৪১ থেকে ৫০ বছর বয়সি ২ জন, ৩১ থেকে ৪০ বছর বয়সি একজন মারা গেছেন।
পরিচালক আরও জানান, বুধবার সকাল ৯টা পর্যন্ত ৫১৩ শয্যার রামেক করোনা আইসোলেশন ইউনিটে রোগী ভর্তি ছিলেন ২৬১ জন। একদিন আগেও এই সংখ্যা ছিল ২৮৯।
বর্তমানে রাজশাহীর ১২৪ জন, চাঁপাইনবাবগঞ্জের ২৭ জন, নাটোরের ৩৮ জন, নওগাঁর ২০ জন, পাবনার ৩৪ জন, কুষ্টিয়ার ১০ জন, জয়পুরহাটের ২ জন, সিরাজগঞ্জের একজন, মেহেরপুরের ৩ জন এবং বগুড়ার একজন।
হাসপাতালে করোনা নিয়ে ভর্তি রয়েছেন ১৪৭ জন। করোনা উপসর্গ নিয়ে ভর্তি রয়েছেন ৭৩ জন। করোনা ধরা পড়েনি ভর্তি ৪১ জনের। এ ছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় ভর্তি হয়েছেন ১৬ জন। এই একদিনে হাসপাতাল ছেড়েছেন ৩২ জন।
এর আগে মঙ্গলবার (১৭ আগস্ট) রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতাল ল্যাবে ১৩৫ জনের নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। এর মধ্যে করোনা ধরা পড়েছে ৩৮ জনের নমুনায়।
একই দিনে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ ল্যাবে নমুনা পরীক্ষা হয়েছে আরও ৪৬৬ জনের। এর মধ্যে করোনা শনাক্ত হয়েছে ৫৭ জনের। পরীক্ষার অনুপাতে রাজশাহীর ১৬ দশমিক ৪৪ শতাংশ এবং চাঁপাইনবাবগঞ্জের ১৩ দশমিক ৭৯ শতাংশ নমুনায় করোনা শনাক্ত হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত ১ আগস্ট থেকে ১৮ আগস্ট পর্যন্ত রামেক হাসপাতালের করোনা ইউনিটে মারা গেছেন ২৪৪ জন। এর মধ্যে করোনায় ৯৮ জন, করোনা সংক্রমণের উপসর্গ নিয়ে ১১৮ জন এবং করোনা নেগেটিভ সত্ত্বেও অন্যান্য শারীরিক জটিলতায় ২৮ জনের মৃত্যু হয়।
এর আগে গত বছরের এপ্রিল থেকে এই বছরের জুলাই পর্যন্ত রামেক হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৯ হাজার ৩৯ জন রোগী। এর মধ্যে সুস্থ হয়ে হাসপাতাল ছেড়ে গেছেন ২ হাজার ৫১১ জন।
এই ১৫ মাসে মারা গেছেন ১ হাজার ৬০৯ জন। এর মধ্যে করোনায় মৃত্যু হয়েছে ৫২৬ জনের। অন্যদের মৃত্যু হয়েছে উপসর্গ নয়তো অন্যান্য শারীরিক জটিলতায়।
Leave a Reply