স্টাফ রিপোর্টার: নওগাঁ মেডিকেল কলেজ স্থাপিত আরটি-পিসিআর ল্যাব করোনাভাইরাস সনাক্ত ও দ্রুত ফলাফল দেওয়ায় সুফল পেতে শুরু করেছে জেলাবাসী। নমুনা দেওয়ার ২৪ ঘন্টায় মিলছে রিপোর্ট।
তবে পূর্নাঙ্গ ভাবে এখনো ল্যাবটি চালু করা সম্ভব হয়নি। চলতি মাসেই পূর্নাঙ্গ ভাবে চালু হবে আশাবাদী কর্তপক্ষ।
নওগাঁ মেডিকেল কলেজের আরটি-পিসিআর ল্যাব সূত্রে জানা যায়, চলতি মাসের ৩ আগষ্ট (মঙ্গলবার) খাদ্যমন্ত্রী সাধন চদ্র মজুমদার আরটি-পিসিআর ল্যাবর উদ্বোধন করেন।
নওগাঁ সদর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালের নতুন ভবনের তৃতীয় তলায় আরটি-পিসিআর ল্যাব ইউনিট চালু করা হয়েছে। যেখানে অভিজ্ঞ জনবল রয়েছে দুই জন ডাক্তার ও ছয়জন টেকনিশিয়ানসহ ১০ জন।
ল্যাব স্থাপনের এক সপ্তাহ পর গত ১০ আগষ্ট থেকে নমুনা পরীক্ষা শুরু হয়েছে। প্রাথমিক অবস্থায় প্রতিদিন ৩০ টি নমুনা পরীক্ষার ফলাফল দেওয়া সম্ভব হচ্ছে। প্রতিটি নমুনা থেকে ফলাফল পেতে সময় লাগছে প্রায় ৭-৮ ঘন্টা।
এক শিফট ল্যাব চালু করা হয়েছে। গত ১০-১৮ আগষ্ট পর্যন্ত ২৭০ টি নমুনার রিপোর্ট দেওয়া হয়েছে। নমুনা সংগ্রহের ২৪ ঘন্টার মধ্যেই রিপোর্ট দেওয়া সম্ভব হচ্ছে।
জেলায় প্রায় ৩০ লাখ মানুষের বসবাস। এতো বড় জেলায় আরটি-পিসিআর ল্যাব না থাকায় করোনা পরীক্ষায় বেশ বিড়ম্বনা পেতে হচ্ছিলো জেলাবাসীক। শুরুতে করোনা ভাইরাসের নমুনা পরীক্ষার জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ, বগুড়া ও ঢাকায় পাঠানো হইতো।
যেখান প্রায় এক সপ্তাহের মতো সময় লাগতো। এরপর রাজশাহী মেডিকেল কলেজ ও বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকল কলেজ থেকে নমুনা পরীক্ষা করা হয়। বাড়তি চাপ থাকায় অনেক সময় অপেক্ষা করতে হয়।
ফলাফল দেড়িতে আসায় মানুষের মাঝে হতাশা কাজ করতো। করোনাভাইরাস সনাক্ত ও দ্রুত ফলাফল প্রদানের আরটি-পিসিআর ল্যাব স্থাপনে ফলে জেলাবাসীর সেই স্বপ পুরণ হয়েছে।

নওগাঁ শহরের উকিল পাড়া মহল্লার বাসিন্দা বয়জ্যৈষ্ঠ আবুল কালাম বলেন, শারীরিক সমস্যা থাকায় মাঝেমধ্য পা ফুলে উঠে। ভাল ডাক্তার দেখানোর জন্য ঢাকায় যাব ভাবছি। প্রতিবেশীদের মাধ্যমে জানতে পারি করোনা সনদ ছাড়া ডাক্তার রোগীদের দেখছেন না।
করোনা টেস্ট করার জন্য সদর হাসপাতালে নমুনা দেওয়ার পর ফলাফল পজেটিভ আসে। অথচ করোনা ভাইরাসের কোন ধরনের উপসর্গ ছিলো না। এরপর গত ১৪ দিন বাসায় ছিলাম।
তিনি বলেন, গত ১৫ আগষ্ট আবারও নমুনা দিলাম। নমুনা দেওয়ার একদিন পরই মোবাইল ম্যাসেজ (খুদেবার্তা) আসে ফলাফল নেগেটিভ। অথচ আগে পিসিআর ল্যাব না থাকায় কয়েকদিন অপেক্ষা করতে হয়েছিলো। এখন ২৪ ঘন্টায় করোনার ফলাফল পাওয়ায় সুবিধা হচ্ছে।
নওগাঁ মেডিকল কলেজের আরটি-পিসিআর ল্যাব ইনচার্জ ও সহকারী অধ্যাপক ডা: রাশেদ মোহাম্মদ শরীফ বলেন, নমুনা সংগ্রহের ২৪ ঘন্টায় সিভিল সার্জন অফিস থেকে ল্যাব নমুনা আসে।
প্রাথমিক অবস্থায় প্রতিদিন ৩০ টি নমুনা পরীক্ষা করা হচ্ছে। প্রতিটি নমুনার রিপোর্ট পেতে প্রায় ৭-৮ ঘন্টা সময় লাগছে। চলতি মাসে (আগষ্ট) পুরোদমে ল্যাবটি চালু হবে বলে আশাবাদী। এরপর প্রতিদিন ৯৬ টি নমনুার রিপোর্ট দেওয়া সম্ভব হবে।
তিনি বলেন, অনেক সময় মেশিন লোড নেওয়ার পর যন্ত্রাংশের সমস্যা হতে পারে এ জন্যই কম পরিমাণ নমুনা দিয়ে আমরা পরীক্ষা শুরু করেছি।
নওগাঁ জেলা ডিপুটি সিভিল সার্জন ডা: মঞ্জুর-এ-মোর্শেদ বলেন, জেলায় গড়ে প্রতিদিন ১৫০ জনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়। প্রাথমিক অবস্থায় এন্টিজেন টেস্টের মাধ্যমে কিছু পজেটিভ ও নেগেটিভ ফলাফল সনাক্ত করা সম্ভব হয়।
এরপর ৩০টি নমুনা নওগাঁ মেডিকল কলেজে পাঠানা হয়। আর বাকী নমুনা রাজশাহী মেডিকল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে পাঠানা হয়। রামেক পাঠানার তিনদিনের মধ্য রিপোর্ট পাওয়া যায়।
Leave a Reply