স্টাফ রিপোর্টার: সুস্বাদু নাক ফজলির পিতৃভূমি নওগাঁর বদলগাছী উপজেলা। ছোট যমুনা নদী বিধৌত এ উপজেলায় ফল-ফসলের প্রাচুর্য্য বরাবরেই। ধানের পাশাপাশি আলু, পটল, কাঁচা মরিচ, লাউসহ সকল প্রকার সবজি চাষেও সমৃদ্ধ।
উৎপাদিত ফসলের এবার যুক্ত হলো বারোমাসি তরমুজ ‘কারিশমা’। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সহযোগিতায় বারো মাস ‘কারিশমা’ চাষে ব্যাপক সফলতা পেয়েছেন কৃষক আরমান হোসেন। পরীক্ষামূলক চাষেই বাজিমাত করেছেন কোলা ইউপির ভোলার পালশা গ্রামের এই কৃষক।
উপজেলা কৃষি অফিস জানায়, এ উপজেলায় তরমুজের চাষ হয় না বললেই চলে। তরমুজের ক্ষেত্রে পুরোপুরিই বাহিরের জেলা থেকে আমদানি নির্ভর এ উপজেলা।
এ আর মালিক সীডস নামের একটি আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান জাপানের সাকাতা থেকে কারিশমা জাতের তরমুজের বীজ নিয়ে আসে। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সার্বিক সহযোগিতায় প্রদর্শনী প্রকল্প হিসেবে পরীক্ষামূলকভাবে একজন কৃষক হাইব্রিড জাতের এই কারিশমা তরমুজ চাষ করে।
কৃষি অফিস আরো জানায়, ঘন ও মাচা পদ্ধতিতে এক বিঘা জমিতে কারিশমা জাতের বারোমাসি তরমুজের চারা রোপণ করা যাবে এক হাজার থেকে বারোশ টি। রোপণের ৬০ থেকে ৬৫ দিনের মধ্যেই এই তরমুজ বিক্রয়ের উপযোগী হয়। এক থেকে দের ফিট দূরত্বে রোপণকৃত প্রতি গাছে ফল হয় তিন থেকে চারটি। প্রতিটির ওজন আড়াই থেকে তিন কেজি।
কৃষক আরমান হোসেন বলেন, উপজেলা কৃষি অফিসের পরামর্শে ও সার্বিক সহযোগিতায় আমি তরমুজের চাষাবাদ করছি। জুন মাসের শুরুতে ২৫ শতক জমিতে ৪০০ টি কারিশমা জাতের তরমুজের চারা রোপণ করেছি। গাছগুলো বেশ ভালোভারেই বেড়ে উঠেছে। চারা রোপণের দুই মাস পর থেকেই আমি ফল বিক্রি শুরু করেছি।
তিনি আরো বলেন, ২৫ শতক জমিতে মোট খরচ হয়েছে ২৫ হাজার টাকা। জুনের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে তরমুজ বিক্রি শুরু করেছি। ৪০ টাকা কেজি দরে ৩০০ কেজি তরমুজ বিক্রি করেছি।
সবকিছু ঠিক থাকলে আমার যে পরিমাণ গাছ আছে তা থেকে আড়াই হাজার থেকে তিন হাজার কেজি ফলন হবে। যার আনুমানিক দাম হবে এক লাখ টাকারও বেশি।
এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ হাসান আলী বলেন, তরমুজ অনেক পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ একটি ফল। এতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ, সি, পটাশিয়াম ও আঁশ আছে।
যা শরীরের জন্য খুবই উপকারী। কারিশমা জাতের হাইব্রিড এ তরমুজ চাষে অল্প সময়ে ও অল্প খরচে অধিক লাভবান হওয়া যায়। প্রদর্শনী প্রকল্প হিসেবে চাষাবাদ করে আমরা ব্যাপক সফলতা পেয়েছি।
তিনি বলেন, এ জাতের তরমুজ বারোমাস চাষ করা যায়। কারিশমা জাতের তরমুজের বাজারমূল্যও বেশি। এ উপজেলার কৃষকদের কারিশমা জাতের তরমুজ চাষে উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। বেশি পরিমাণে চাষাবাদ হলে আমরা এর জন্য একটা বাজার তৈরি করতে পারবো। এতে করে কৃষক খুব সহজেই ভালো দামে বিক্রি করতে পারবে।
Leave a Reply