৩ দিনের মাথায় উঠে যাচ্ছে কার্পেটিং

নাটোর: নাটোরের লালপুরে ৭০ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত পাকা রাস্তা কার্পেটিং পায়ের আঘাতে উঠে যাচ্ছে। নির্মাণের তিন দিনের মাথায় পায়ের আঘাতে উঠে যাচ্ছে কার্পেটিং।

এদিকে দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে লালপুর উপজেলা প্রকৌশলীসহ দুই প্রকৌশলীকে শোকজ করেছেন নাটোরের স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহা. শহিদুল ইসলাম। আগামী সাতদিনের মধ্যে তাদেরকে লিখিত ভাবে কারণ দর্শানোর জন্য বলা হয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয়রা জানান, নাটোরের লালপুর উপজেলার দুড়দড়িয়া ইউনিয়নের রাধাকৃষ্ণপুর কালি মন্দির থেকে মির্জাপুর প্রাথমিক বিদ্যালয় পর্যন্ত ৭০ লাখ টাকা ব্যয়ে এক কিলোমিটার পাকা রাস্তার সংস্কার কাজ শুরু হয় গত সপ্তাহে।

নিন্মমানের কাজের অভিযোগে স্থানীয়রা কয়েকবার বাঁধা দিয়ে পরে ভালো মানের কাজ হচ্ছে বলে প্রচার চালিয়ে উপজেলা প্রকৌশলীদের সামনেই কাজ করে ঠিকাদারের লোকজন। তিনদিন আগে রাস্তার সংস্কার কাজ শেষ করে ঠিকাদার।

এলাকাবাসী হঠাৎই লক্ষ্য করেন রাস্তার যেকোনো অংশে আঙ্গুলের টানেই উঠে যাচ্ছে কার্পেটিং। হাত বা পা দিয়ে আঘাত করলেই একদিক থেকে সব রাস্তার কার্পেটিং উঠে যাচ্ছে।

এলাকাবাসী ও গণমাধ্যম কর্মীদের মাধ্যমে বিষয়টি জানতে পারেন নাটোর এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শহিদুল ইসলাম। তিনি তাৎক্ষণিক ভাবে বিষয়টি দেখার তিনি ঘটনাস্থলে যান এবং ল্যাবরেটরি সহকারী প্রকৌশলী আবু সালেহ মো. নাসিমকে ঘটনাস্থলে পাঠিয়ে রাস্তার মালামাল পরীক্ষাগারে এনে পরীক্ষার ব্যবস্থা করেন।

পরীক্ষায় নিন্মমানের সামগ্রী ব্যবহারের প্রমাণ পাওয়া যায়। এতে এই রাস্তার কাজে তদারকির দায়িত্বে থাকা লালপুর উপজেলা প্রকৌশলী জুলফিকার আলী এবং উপসহকারী প্রকৌশলী মো. আব্দুর রাজ্জাককে শোকজ করেছেন নাটোরের স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী শহিদুল ইসলাম।

সংশ্লিষ্টরা জানায়, লালপুর উপজেলার দুড়দড়িয়া ইউনিয়নের রাধাকৃষ্ণপুর কালি মন্দির থেকে মির্জাপুর প্রাথমিক বিদ্যালয় পর্যন্ত এই এক কিলোমিটার রাস্তার সঙ্গে তিনটি কালভার্টসহ মোট ব্যয় ধরা হয় প্রায় ৭০ লাখ টাকা।

আর কাজটি পায় পান এসএম সামছুল ইসলাম নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। তবে এসএম সামছুল ইসলাম নামের এই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ পেলেও কাজটি করেছে তার ব্যবসায়িক পার্টনার ঠিকাদার বাবু।

নিম্নমানের কাজের বিষয়ে জানতে চাইলে বাবু বলেন, বিটুমিন কম থাকার কারণে হয়ত এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। তবে নির্বাহী প্রকৌশলীর নির্দেশনা মতো পুনরায় কাজটি করে দেওয়া হবে।

এমন নিম্নমানের কাজের সঙ্গে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।

লালপুর এলজিইডির উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. আব্দুর রাজ্জাক যুগান্তরকে শোকজ নোটিশ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

নাটোর স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহা. শহিদুল ইসলাম সোমবার দুপুরে যুগান্তরকে বলেন, বিষয়টি আমার নজরে আসায় তাৎক্ষনিক ব্যবস্থা নিয়েছি। এই কাজে তদারকির দায়িত্বে থাকা দুজন প্রকৌশলীকে শোকজ করা হয়েছে।

আগামী সাতদিনের মধ্যে তাদেরকে লিখিতভাবে কারণ দর্শানোর জন্য বলা হয়েছে। বর্ষা আরেকটু কমলে ঠিকাদারকে নতুনভাবে কাজ করার জন্য বলা হয়েছে। আগের কাজের জন্য ঠিকাদারকে এখনো বিল পরিশোধ করা হয়নি। কাজ ঠিকমতো না হওয়া পর্যন্ত তাদের কোনো বিল পরিশোধ করা হবে না।

Leave a Reply