সোনার বাংলা গড়তে কাজ করছেন রাণীনগরের ইউএনও

স্টাফ রিপোর্টার: সবকিছুর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে এগিয়ে চলেছে দেশের ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠির মানুষরা। বর্তমান সরকারের ছোঁয়ায় বদলে যাচ্ছে নৃগোষ্ঠি সম্প্রদায়ের মানুষদের জীবনমাত্রা। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের লাল-সবুজের আলোকিত বাংলাদেশ গড়তে কাজ করে যাচ্ছে এই সব সম্প্রদায়ের মানুষরা।

ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠি মাহাতো সম্প্রদায়ের সন্তান নওগাঁর রাণীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুশান্ত কুমার মাহাতো। তিনি সিরাজগঞ্জ জেলার রায়গঞ্জ উপজেলার মাহাতো সম্প্রদায়ের কৃতিসন্তান। এই সম্প্রদায়ের আরো ২জন কৃতিসন্তান ইউএনও হিসেবে দেশের অন্যান্য উপজেলায় কর্মরত রয়েছেন।

দরিদ্র সম্প্রদায়ের সন্তান সুশান্ত অভাবের সঙ্গে যুদ্ধ করে সফলতার মালা গলায় জড়িয়েছেন। সংসারের অভাব দূর করতে বাবার সঙ্গে মাঠে কৃষি কাজও করেছেন। সুশান্ত কুমার মাহাতো সিরাজগঞ্জ জেলার রায়গঞ্জ উপজেলার পশ্চিম আটঘরিয়া গ্রামে স্বর্গীয় শহর লাল মাহাতোর ঘরে ১৯৮৫সালে জন্ম গ্রহণ করেন।

এরপর নিজ এলাকায় এসএসসি ও এইচএসসি পর্যায়ের পড়ালেখা শেষ করে শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএসসি এজি (অনার্স) ও এমএস ইন এগ্রোনমি ডিগ্রি অর্জন করে ৩১তম বিসিএসের মাধ্যমে সহকারি কমিশনার হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। কর্মজীবনের শুরুতেই তিনি নীলফামারী জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে যোগদান করেন এবং একই পদে বগুড়া জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে কর্মরত ছিলেন।

পরবর্তিতে সহকারি কমিশনার (ভূমি) হিসেবে বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলায়, ২০১৮সালে নাটোরের সিংড়া উপজেলায় নির্বাহী কর্মকর্তা, পরে রাজশাহীর তানোড় উপজেলায় এবং সর্বশেষ নওগাঁর রাণীনগর উপজেলায় চলতি বছরের মার্চ মাসে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে যোগদান করেন।

তার প্রতিটি কর্মস্থলেই তিনি সরকারের এজেন্ডা বাস্তবায়নে প্রাণপন চেষ্টা করেছেন। রাণীনগর উপজেলায় যোগদানের পর তিনি প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ন-২ প্রকল্পের আওতায় প্রাপ্ত ৩৩ টি সেমিপাকা ঘর নির্মাণ করে প্রকৃত গৃহহীন মানুষদের কাছে হস্তান্তর করেছেন।

করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে সরকারের জারি করা কঠোর বিধি নিষেধ বাস্তবায়ন করার লক্ষ্যে তিনি উপজেলার সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের নিয়ে ব্যতিক্রমী টিম গঠন করে ওয়ার্ড পর্যায়ে একযোগে কাজ করেছেন। ৩৩৩ নম্বরের মাধ্যমে তিনি উপজেলার প্রায় ৫ শতাধিক অসহায় ও দু:স্থ্যদের মাঝে এক সপ্তাহের খাবার সামগ্রী পৌছে দিয়েছেন।

তিনি উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতি নির্মাণ করেছেন। ১৫আগস্ট উপলক্ষ্যে কাঙ্গালী ভোজ না করে তিনি উপজেলার ৯শ’ জন অসহায়, গরীব ও দু:স্থ্য মানুষের মাঝে ১হাজার টাকা সমমূল্যের খাবার সামগ্রী বিতরন করেছেন।

রাজনৈতিক জীবনে তিনি বংশানুক্রমে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সঙ্গে জড়িত। শিক্ষাজীবনে তিনি ছাত্রলীগের একনিষ্ঠ কর্মী ছিলেন। ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠি সম্প্রদায়ের মানুষকে সামনে এগিয়ে নেয়ার জন্য তিনি নিজ এলাকায় মাহাতো ফাউন্ডেশন গড়তে সহায়তা করেছেন ও ২০১০সালে তিনি বাবা শহরলাল মাহাতোর নামে টেকনিক্যাল স্কুল এ্যান্ড কলেজ প্রতিষ্ঠা করেছেন। দাম্পত্যজীবনে তিনি এক পুত্র সন্তানের জনক। ডাক্তার স্ত্রী শাপলা রাণী মাহাতোকে নিয়ে তিনি সমাজের মানুষের উন্নয়নের জন্য কাজ করে আসছেন।

সুশান্ত কুমার মাহাতো তার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সম্পর্কে বলেন, প্রজাতন্ত্রের একজন ক্ষুদ্র কর্মচারী হিসেবে “বঙ্গবন্ধু, বাংলাদেশ ও মুক্তিযুদ্ধ-স্বাধীনতা” এই ৩টি চেতনাকে বুকে ধারন, লালন ও পালন করার মাধ্যমে ২০৪১ সালের মধ্যে জাতির পিতা হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ বিনির্মাণে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকার কর্তৃক অর্পিত সকল দায়িত্ব সুচারুভাবে প্রতিপালন করে দেশের সেবায় নিজেকে নিমগ্ন রাখতে চান তিনি।

Leave a Reply