স্টাফ রিপোর্টার, রাজশাহী: গত ২৪ ঘণ্টায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের করোনা ইউনিটে ৭ জন মারা গেছেন। এর মধ্যে করোনায় ২ জন, করোনা উপসর্গে ৪ জন এবং করোনা নেগেটিভ হয়েও একজন মারা গেছেন। চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার (২৮ আগস্ট) সকাল ৯টা থেকে রোববার (২৯ আগস্ট) সকাল ৯টার মধ্যে এরা মারা যান।
রামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী জানান, গত ২৪ ঘন্টায় করোনা সংক্রমণে হাসপাতালে ২ জন মারা গেছেন। তারা দুজনই রাজশাহী জেলার বাসিন্দা।
আর করোনা সংক্রমণের উপসর্গে নিয়ে রাজশাহীর ২ জন, নাটোরের একজন এবং নওগাঁর একজন করে মারা গেছেন। এ ছাড়া করোনা নেগেটিভ হয়েও অন্যান্য শারীরিক জটিলতায় মারা গেছেন চাঁপাইনবাবগঞ্জের একজন। স্বাস্থ্যবিধি মেনে মরদেহ দাফনের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
তিনি জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ৩ জন মারা গেছেন হাসপাতালের নিবীড় পরিচর্যাকেন্দ্রে(আইসিইউ)। এ ছাড়া কেবিন, ৩, ১৪ ও ১৭ নম্বর ওয়ার্ডে একজন করে মারা গেছেন।
হাসপাতালে মারা যাওয়া ২ জন পুরুষ এবং ৫ জন নারী। তাদের মধ্যে ৪ জনের বয়স ৬১ বছরের উপরে। এ ছাড়া ৫১ থেকে ৬০ বছর বয়সি ২ জন এবং ৪১ থেকে ৫০ বছর বয়সি একজন মারা গেছেন।
পরিচালক আরও জানান, শনিবার সকাল ৯টা পর্যন্ত ৪১৮ শয্যার রামেক করোনা আইসোলেশন ইউনিটে রোগী ভর্তি ছিলেন ১৭৬ জন। একদিন আগেও এই সংখ্যা ছিল ১৭৭।
বর্তমানে রাজশাহীর ৭৯ জন, চাঁপাইনবাবগঞ্জের ৩২ জন, নাটোরের ২৪ জন, নওগাঁর ১৪ জন, পাবনার ১৭ জন, কুষ্টিয়ার ২ জন, চুয়াডাঙ্গার একজন, জয়পুরহাটের ৩ জন, সিরাজগঞ্জের একজন, নীলফামারীর একজন এবং মেহেরপুরের ২ জন হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।
হাসপাতালে করোনা নিয়ে ভর্তি রয়েছেন ৭৫ জন। করোনা উপসর্গ নিয়ে ভর্তি রয়েছেন ৪৩ জন। করোনা ধরা পড়েনি ভর্তি ২৪ জনের। এ ছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় ভর্তি হয়েছেন ৩০ জন। এই একদিনে হাসপাতাল ছেড়েছেন ২৩ জন।
এর আগে শনিবার (২৮ আগস্ট) রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতাল ল্যাবে ৯৪ জনের নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। এর মধ্যে করোনা ধরা পড়েছে ৩৮ জনের নমুনায়।
একই দিনে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ ল্যাবে নমুনা পরীক্ষা হয়েছে আরও ২৭৮ জনের। এর মধ্যে করোনা শনাক্ত হয়েছে ২৭ জনের। পরীক্ষার অনুপাতে রাজশাহীর ২১ দশমিক ৩১ শতাংশ, জয়পুরহাটের ১০ শতাংশ এবং চাঁপাইনবাবগঞ্জের ১০ দশমিক ২৩ শতাংশ নমুনায় করোনা ধরা পড়েছে।
প্রসঙ্গত, গত ১ আগস্ট থেকে ২৯ আগস্ট পর্যন্ত রামেক হাসপাতালের করোনা ইউনিটে মারা গেছেন ৩৪৫ জন। এর মধ্যে করোনায় ১৪৫ জন, করোনা সংক্রমণের উপসর্গ নিয়ে ১৬৭ জন এবং করোনা নেগেটিভ সত্ত্বেও অন্যান্য শারীরিক জটিলতায় ৩২ জনের মৃত্যু হয়।
এর আগে গত বছরের এপ্রিল থেকে এই বছরের জুলাই পর্যন্ত রামেক হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৯ হাজার ৩৯ জন রোগী। এর মধ্যে সুস্থ হয়ে হাসপাতাল ছেড়ে গেছেন ২ হাজার ৫১১ জন।
এই ১৫ মাসে মারা গেছেন ১ হাজার ৬০৯ জন। এর মধ্যে করোনায় মৃত্যু হয়েছে ৫২৬ জনের। অন্যদের মৃত্যু হয়েছে উপসর্গ নয়তো অন্যান্য শারীরিক জটিলতায়।
Leave a Reply