স্টাফ রিপোর্টার: নওগাঁয় এবার আউশের ফলন তুলনামূলকভাবে কম। এতে হতাশ জেলার চাষিরা। অনেকেই লাভের আশা ছেড়ে দিয়েছেন।
নওগাঁর আত্রাই উপজেলার শুটকিগাছা গ্রামের কৃষক ডেভিট বলেন, ‘আমি তিন বিঘা জমিতে আউশ ধান রোপণ করেছিলাম। রোপণের কিছুদিন পরে হঠাৎ করে ধানের গাছগুলো লাল রং হয়ে যায়। তারপর আবার নতুন করে জমিতে ধান রোপণ করা হয়েছে।
‘এখন ধান কাটার লেগে দুই বিঘা ধান কেটে ১২ মণের মত ধান পেয়েছি। এবার আমার লস হয়ে গেল।’
রাণীনগর উপজেলার কাশিমপুর গ্রামের কৃষক কার্তিক সাহা জানান, ‘পাঁচ বিঘা জমিতে আউশ ধান রোপণের পর অল্প বৃষ্টি হলেও আকাশে অনেক দিন ধরে মেঘ ছিল।
সময় মতো রোদ না হওয়ায় ধানের চারার গোড়াতে বৃষ্টির পানি জমা ছিলো বেশ কিছুদিন। পানি শুকানোর পর চারাগুলা ঠিকমতো কুশি ধরিছিলো না। এল্লার এই কারণে ভালো ফলন হয়নি।’
কৃষকরা জানালেন, গত বছর স্থানীয় বাজারে প্রকারভেদে প্রতি মণ আউশ ধান ৯৫০ থেকে ১২০০ টাকায় কেনা-বেচা হয়েছিল। এবার প্রতি মণ আউশ ধান ৭০০ থেকে ৭৫০ টাকা দরে কেনা-বেচা হচ্ছে।
মান্দা উপজেলার তেঁতুলিয়া গ্রামের কৃষক শরিফ বলেন, ‘বাজারে প্রতি মণ ধান ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকা। যেখানে প্রতি বিঘাঢ ধান চাষ বাবদ খরচ সাড়ে ৬ হাজার টাকা। ধান পাচ্ছি বিঘাপ্রতি ৬ মণ। আর ছয় মণ ধানের দাম বর্তমানে চার হাজার ২০০ টাকা। সে হিসেব করে বিঘাপ্রতি লোকসান হচ্ছে ২ হাজার থেতে আড়াই হাজার টাকার মতো।’
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের খামারবাড়ী নওগাঁর উপপরিচালক শামসুল ওয়াদুদ জানান, এবার আউশ ধান রোপণের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়নি। কিছুদিন আকাশ মেঘাচ্ছন্ন থাকার কারণে রোদ কম হওয়ায় পাতার ক্লোরোফিল কম হয়েছে। এ জন্য কিছু এলাকার জমিতে কুশিবর্ধন ঠিকমতো হতে পারেনি। তাই ফলন কিছুটা কম হয়েছে।
তবে এ বছর জেলার কোথাও রোগবালাই অথবা পোকার আক্রমণ নেই বলে দাবি এই কর্মকর্তার। ব্রি-৪৮ সহ নতুন জাতের যেসব ধান রোপণ করা হয়েছিল, সেগুলোর ফলন ভালো হয়েছে বলে জানান তিনি।
তার পরও এ বছর আপৎকালীন ফসল আউশ ধান উৎপাদনের লক্ষ্য ছাড়িয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে বলে আশা করছেন তিনি।
Leave a Reply