প্রিয় দেশ ডেস্ক: টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে মহিলা মাদরাসায় এক প্রবাসীর স্ত্রীকে ধর্ষণের দায়ে কাজী শহিদুর নামে এক ব্যক্তিকে ৫০ বার জুতাপেটা করে ঘটনার মীমাংসা করা হয়েছে।
গত ২৪ আগস্ট উপজেলার মহেড়া ইউনিয়নের গোড়াকী কাজীনগর এলাকার দারুল উলুম গোড়াকী মাদরাসায় সালিস বৈঠক করে মাদরাসা কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা ঘটনা মীমাংসা করেন। পরে ঘটনাটি এলাকায় জানাজানি হলে নানা সমালোচনার সৃষ্টি হয়।
ধর্ষণে অভিযুক্ত কাজী শহিদুর ওই মাদরাসার প্রতিষ্ঠাতা পাকিস্তান প্রবাসী আব্দুল গফুর সরকারের ভাতিজা।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে , গত ২৪ আগস্ট উপজেলার মহেরার গোড়াকীর দারুল উলুম গোড়াকী মাদরাসায় আবাসিকে থাকা উপজেলার ঘোনাপাড়া গ্রামের এক প্রবাসীর স্ত্রী দুপুরে তার দুই মেয়েকে দেখতে আসেন। এ সময় মাদরাসার অফিস কক্ষে অপেক্ষা করছিলেন ওই নারী।
পরে মাদরাসার প্রতিষ্ঠাতার ভাতিজা এবং ওই প্রতিষ্ঠানের ইলেক্ট্রিশিয়ান কাজী শহিদুর ওই নারীকে ধর্ষণ করেন। তার চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এসে শহিদুরকে আটক করেন।
আটকের বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর মাদরাসা কর্তৃপক্ষ বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার জন্য ওইদিন বিকেলেই সালিসি বৈঠকের আয়োজন করে। সালিসে অভিযুক্ত কাজী শহিদুর তার অপরাধের কথা স্বীকার করেন। এ সময় তাকে ধর্ষণের শাস্তি হিসেবে ৫০ বার জুতাপেটা করে ভবিষ্যতে এ ধরনের কাজ আর করবে না বলে মুচলেকা নেওয়া হয়।
গোড়াকী গ্রামের কাজী মোজাম্মেল বলেন, মাদরাসার প্রতিষ্ঠাতা আব্দুল গফুর সরকার বর্তমানে পাকিস্তানে বসবাস করছেন। তিনিই মাদরাসাটি প্রতিষ্ঠা করেছেন। তার অবর্তমানে মাদরাসাটি দেখাশোনা করেন তার ছোট ভাই ইয়াসিন মিয়াসহ পরিবারের লোকজন। তারই ভাতিজা মাদরাসায় আসা এক অভিভাবককে ধর্ষণ করে। পরে বিষয়টি ধামাচাপা দিতে তাকে জুতাপেটা করা হয়েছে। তবে সে সময় ওই নারী উপস্থিত ছিলেন না।
এলাকাবাসী জানায়, এই মাদরাসায় প্রায় পাঁচ শতাধিক ছাত্রী আবাসিকে থেকে লেখাপড়া করছে। এ ঘটনার পর ওই শিক্ষার্থীরা আতঙ্কে রয়েছে। ধর্ষণে অভিযুক্ত কাজী শহিদুর মাদরাসার প্রতিষ্ঠাতার ভাতিজা ও প্রভাবশালী হওয়ায় তার বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুলতে সাহস পায়নি।
দারুল উলুম গোড়াকী মাদরাসার আরেক প্রতিষ্ঠাতা ইয়াসিন মিয়া জানান, প্রতিষ্ঠানটি রক্ষার জন্য তার ভাতিজাকে সালিসের মাধ্যমে জুতাপেটা করা হয়েছে। একই সঙ্গে তাকে মাদরাসা থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে।
মহেড়া ইউনিয়ন পরিষদের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য শাহাদত হোসেন জানান, মাদরাসার প্রতিষ্ঠাতার ভাতিজা হওয়ায় এবং প্রতিষ্ঠানটির কথা ভেবে বিষয়টি সালিসি বৈঠকের মাধ্যমে মীমাংসা করা হয়েছে। তবে শহিদুর সালিসে ধর্ষণের কথা স্বীকার করেছে।
তিনি আরও জানান, ধর্ষণের সময় শহিদুরকে হাতে নাতে ধরে ফেলে এলাকার কয়েকজন যুবক। এর আগেও বিভিন্ন প্রলোভনে সে ওই নারীকে ধর্ষণ করেছে বলে জানা গেছে।
Leave a Reply