স্টাফ রিপোর্টার: বাংলাদেশে দুর্ভিক্ষ আর কোনদিন হবে না বলে মন্তব্য করেছেন অর্থনীতিবিদ ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর অধ্যাপক ড. আতিউর রহমান।
তিনি বলেন, দেশে কোনো দিনই আর দুর্ভিক্ষ হবেনা। কারণ-দুর্ভিক্ষ শুধুমাত্র উৎপাদনহীণতার জন্য হয়না, মানুষের ক্রয় ক্ষমতা কমে গেলে হয়।
শুক্রবার (২৫ নভেম্বর) সকালে রাজশাহীতে এক অনুষ্ঠানে এই মন্তব্য করেন তিনি। ওই নগর ভবনের গ্রীণপ্লাজায় আয়োজিত ওই অনুষ্ঠানে ড. আতিয়ার রহমান ছাড়াও দেশ বরেণ্য ছয় গুণীজনকে সংবর্ধনা দেয় রাজশাহী সিটি করপোরেশন।
ড. আতিউর রহমান বলেন, মানুষের এখনো পণ্য ক্রয়ের সক্ষমতা রয়েছে। গ্রামের কৃষি শ্রমিকরা এখন প্রতিদিন ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা আয় করেন। দুর্ভিক্ষ মানসিকতার জন্য হয় উল্লেখ করে মানসিকতার ইতিবাচক পরিবর্তনের তাগিদ দেন এই অর্থনীতিবিদ।
আরও পড়ুন: রাজশাহীতে বরেণ্য ৬ জন গুণীজনকে সংবর্ধনা
রাজশাহীর উন্নয়নের ভূয়সী প্রসংশা করেন ড. আতিয়ার রহমান। তিনি বলেন, পুরো বাংলাদেশ ঘুরে দেখুন। আমরা এরকম আরেকটি নগর গড়ে তুলতে পারছিনা। ঢাকা অত্যন্ত বিশ্রী নগরায়নের শিকার। নগরগুলো ঢাকাকেই বেশি অনুকরণ করছে।
কিন্তু ব্যতিক্রম কেবল রাজশাহী। রাজশাহী নিজস্ব মডেলে সবুজ এবং গণমুখী নগরে পরিণত হচ্ছে। বঙ্গবন্ধু যে ধরণের উন্নয়ন চেয়েছিলেন, রাজশাহীতে সেই ধরণের উন্নয়ন হচ্ছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
দেশের উন্নয়ন নিয়ে নানান জনে নানান প্রশ্ন তুলছেন উল্লেখ করে সাবেক গর্ভনর বলেন, আজ দেশের গ্রামগঞ্জে কৃষি শ্রমিকের মজুরী কত? নিশ্চয় ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা। এই টাকা দিয়ে কত কেজি চাল কেনা যায়? সেই পুরো টাকার চাল কি তার লাগে? নিশ্চয় না।
কৃষি বলতে এখানে মাছের চাষ হচ্ছে, সবজি হচ্ছে, নার্সারী হচ্ছে, ফুলের চাষ হচ্ছে, গাবাদি চাষ হচ্ছে। একটা বহুমাত্রিক কৃষি গ্রামে-গঞ্জে বিস্তার লাভ করেছেন।েআমাদের আয় রোজগার বেড়েছে। আমাদের ভরসার পরিবেশ কৃষ্টি হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী আমাদের এই ভরসার পরিবেশ সৃষ্টি করেছেন।
আরও পড়ুন: রাজশাহীর উন্নয়ন প্রমাণ করে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে
তিনি আরও বলেন, স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়তে বঙ্গবন্ধু কাজ শুরু করেছিলেন। কিন্তু আমাদের দুর্ভাগ্য, বিশ্বাসঘাতকদের কারণে সেই ধারা অব্যহত রাখতে পারিনি।
মাত্র সাড়ে তিন বছর সময় পেয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু। মাত্র ৯৩ ডলার মাথাপিছু আয় নিয়ে ’৭২ সালে যাত্রা শুরু করেছিলেন। সাড়ে তিন বছরের মাথায় ৭২ ডলারকে টেনে ২৭৩ ডলারে নিয়ে গিয়েছিলেন।
৭৫ এর পরের বছর সেই মাথাপিঠু আয় ১৩৮ ডলারে নেমে এসেছিল। ৭৬ সালে তা ১২৮ ডলারে নেমে এসেছিল। দীর্ঘ ১৩টি বছর লেগেছিল বঙ্গবন্ধুর রেখে যাওয়া মাইলফলন মাথাপিঠু আয় ২৭৩ ডলার অর্জনে। এখানে নেতৃত্ব কতটা গুরুত্বপূর্ণ সেটি ভেবে দেখার বিষয়।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও রাজশাহী সিটি মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অতিথি ছিলেন- রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর গোলাম সাব্বির সাত্তার, রাজশাহী জেলা প্রশাসক আব্দুল জলিল, রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার আবু কালাম সিদ্দিক, বাংলাদেশ শিশু একাডেমির মহাপরিচালক আনজীর লিটন, সাংবাদিক রাশেদ চৌধুরী প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন মেয়রপত্নী ও নারীনেত্রী শাহীন আকতার রেণী, রাসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ড. এবিএম শরীফ উদ্দিন প্রমুখ।
Leave a Reply