রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার জি এস এম জাফরউল্লাহ্, এনডিসি
রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার জি এস এম জাফরউল্লাহ্, এনডিসি

স্টাফ রিপোর্টার: জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঘুমন্ত বাঙালি জাতিকে জাগিয়ে তুলেছিলেন মন্তব্য করে রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার জি এস এম জাফরউল্লাহ্ বলেছেন, বঙ্গবন্ধু দেখিয়ে দিয়েছিলেন কীভাবে একটি জাতিকে সচেতন করতে হয়, নিজের অধিকার আদায় করতে হয়।

শুক্রবার (১৭ মার্চ) সকালে জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

এদিন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০৩তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষ্যে অনুষ্ঠিত ‘বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনের অঙ্গীকার, সকল শিশুর সমান অধিকার’ শীর্ষক আলোচনা সভা, পুরস্কার বিতরণী ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

বিভাগীয় কমিশনার বলেন, টুঙ্গীপাড়ার অজপাড়া গাঁয়ে যদি এ খোকা না জন্মাত তবে আমরা জানতাম না স্বাধীনতা কাকে বলে। তাঁর মাত্র ৫৫ বছর জীবনের প্রায় ১৩ বছরই কেটেছে কারাগারে। বাঙালির জন্য কত আত্মত্যাগ করেছেন তিনি। তাঁর একটাই লক্ষ্য ছিলÑ বাঙালি জাতি যেন মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারে।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর ইতিহাস সারাবিশ্ব জানে। তিনি ৭ মার্চের ভাষণের মাধ্যমে সাড়ে ৭ কোটি মানুষকে অধিকার আদায়ের সংগ্রামে উজ্জ্বীবিত করতে পেরেছিলেন। তিনি বলেছিলেন সাড়ে সাত কোটি বাঙালিকে দাবায়ে রাখতে পারবা না। একজন স্মার্ট মানুষের মধ্যে যে যে গুণ থাকতে হয়, তাঁর সবই ছিল বঙ্গবন্ধুর মধ্যে।

বঙ্গবন্ধুর আদর্শ অনুকরণ ও অনুসরণ করে আমাদের ভবিষ্যত প্রজন্মকে গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। আমরা সবাই বঙ্গবন্ধুর আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে তাঁরই সুযোগ্য কন্যার নেতৃত্বে দেশ গড়ার কাজে লেগে পড়েছি। একটু দেরিতে হলেও বঙ্গবন্ধু যে সোনার বাংলার স্বপ্ন দেখেছিলেন আমরা তা বিনির্মাণ করব। ২০৪১ সালের মধ্যে আমরা উন্নত দেশে পরিণত হব।

জেলা প্রশাসক আব্দুল জলিলের সভাপতিত্বে সভায় উপস্থিত ছিলেন- রাজশাহী রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি মোঃ রশিদুল হাসান, আরএমপি’র অতিরিক্ত কমিশনার মোঃ ফারুক হোসেন, পুলিশ সুপার এ বি এম মাসুদ হোসেন, রাজশাহী অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ড. তসিকুল ইসলাম রানা প্রমুখ।

আলোচনা সভার শুরুতে শিশুদের সঙ্গে অতিথিদের নিয়ে বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনের কেক কাটেন বিভাগীয় কমিশনার। সভা শেষে বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণী ও সাংস্কৃতিক পরিবেশনা অনুষ্ঠিত হয়। এর আগে সকালে মহানগরীর বঙ্গবন্ধু চত্বরে জাতির পিতার ম্যুরালে পুস্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা জানানো হয়।

এদিকে সকাল সাড়ে ৯টার দিকে রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের আয়োজনে নিজস্ব কার্যালয়ের সামনে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। এরপর দলীয় কার্যালয়ে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।

এতে সভাপতিত্ব করেন নগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী কামাল। এতে উপস্থিত ছিলেন- রাজশাহী জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর ইকবাল ও নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার, উপ-দপ্তর সম্পাদক পংকজ দে প্রমুখ।

অন্যদিকেদিবসটি উপলক্ষে সকালে রাজশাহী কলেজে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে জেলা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। পরে নগরীর রানীবাজারে দলীয় কার্যালয়ে কেক কাটা হয়। এরপর দোয়া অনুষ্ঠিত হয়।

এই অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অনিল কুমার সরকার। উপস্থিত ছিলেন-সাধারণ সম্পাদক আব্দুল ওয়াদুদ দারাসহ স্থানীয় নেতৃবৃন্দ।

রাজশাহী সিটি করপোরেশনের (রাসিক) উদ্যোগেও দিবসটি পালিত হয়েছে। সকালে নগরীর সিএন্ডবি মোড়ে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। শুরুতে মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনের পক্ষে রাসিকের কাউন্সিলররা শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

এরপর কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ও রাসিক কর্মচারী ইউনিয়নের পক্ষ থেকে পৃথক পৃথকভাবে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। শ্রদ্ধা নিবেদনের পর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে দোয়া করা হয়।

এসময় অন্যদের মধ্যে প্যানেল মেয়র-১ সরিফুল ইসলাম বাবু, প্যানেল মেয়র-২ রজব আলী, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ড. এবিএম শরীফ উদ্দিন, সচিব মশিউর রহমান, প্রধান প্রকৌশলী নুর ইসলাম তুষার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

Leave a Reply